আধুনিকতার পথে ত্রিপুরার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, ১২৬ কোটির প্রকল্পে বদলে যাবে সঞ্চালন লাইন, লোডশেডিং অতীত?

Spread the love

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ছাড়া রাজ্যের উন্নয়ন অসম্ভব

নিজস্ব সংবাদদাতা, যশপাল সিং, ত্রিপুরা:

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ছাড়া রাজ্যের উন্নয়ন অসম্ভব—এই মন্ত্রকে পাথেয় করেই এবার ত্রিপুরার বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী হলো রাজ্য সরকার। আগামী ২০৩১-৩২ সালের মধ্যে রাজ্যের বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে ৭০০ মেগাওয়াটে পৌঁছানোর সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে, প্রায় ১২৬ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রাজ্যের নয়টি প্রধান ১৩২ কেভি সঞ্চালন লাইনের আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হলো।

সোমবার বোধজংনগরে এই বিশাল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে বিদ্যুৎমন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, “আমরা ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি, যদিও বর্তমানে নানা কারণে প্রায় ২৩ ঘণ্টা দিতে পারছি। এই আধুনিকীকরণের পর বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা আরও উন্নত ও কার্যকর হবে।” ডোনার (DoNER) মন্ত্রকের আর্থিক সহায়তায় ত্রিপুরা পাওয়ার ট্রান্সমিশন লিমিটেড (TPTL) এই বিশাল কর্মযজ্ঞের দায়িত্ব নিয়েছে। এর অধীনে পুরনো সঞ্চালন তার বদলে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন HTLS কন্ডাক্টর লাগানো হবে। বিদ্যুৎমন্ত্রী জানান, রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। আগে ট্রেনে কয়লা বা ডিজেল লাগত, কিন্তু পরিবেশ রক্ষায় এখন ট্রেনও চলবে বিদ্যুতে, যার উদ্বোধন হবে আগামী ২৭শে আগস্ট। যানবাহনও ধীরে ধীরে বিদ্যুচ্চালিত হচ্ছে। এই ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতেই এই পরিকাঠামো উন্নয়ন অপরিহার্য।
তিনি আরও বলেন, “আমরা গ্যাসের উপর নির্ভরশীল থাকতে চাই না, কারণ এর ভাণ্ডার সীমিত। তাই আমরা পিএম সূর্য ঘর যোজনা এবং সৌরশক্তির উপর জোর দিচ্ছি।”

মন্ত্রী জানান, ২০১৮ সালের আগে রাজ্যে ১৩২ কেভি সাব-স্টেশন ছিল ১২টি, যা গত সাত বছরে বেড়ে হয়েছে ২০টি এবং আরও দুটির কাজ চলছে। একইভাবে, ৩৩ কেভি সাব-স্টেশন ৪৪টি থেকে বেড়ে ৭৫টি হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎমন্ত্রী স্মার্ট মিটারের পক্ষে সওয়াল করে বলেন, “আমাদের আধুনিক প্রযুক্তিকে গ্রহণ করতে হবে। স্মার্ট মিটার সকলের জন্যই লাভজনক হবে।”
এই প্রকল্পের অধীনে বোধজংনগর-সূর্যমণিনগর, আমবাসা-মনু, আমবাসা-কমলপুর এবং রুখিয়া-উদয়পুর সহ রাজ্যের নয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎ লাইনকে আধুনিকীকরণ করা হবে, যা আগামী এক বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। অনুষ্ঠানে বিধায়ক রতন চক্রবর্তী, টিএসইসিএল-এর এমডি বিশ্বজিৎ বসু সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। এই প্রকল্পের হাত ধরে ত্রিপুরার বিদ্যুৎ পরিকাঠামো যে এক নতুন যুগে প্রবেশ করতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *