খোয়াইয়ের বনেদী স্কুলগুলির অবনমন, সম্মাননার তালিকায় নেই নাম; ক্ষোভ অভিভাবকমহলে

Spread the love

খোয়াইয়ের বনেদী স্কুলগুলির অবনমন, সম্মাননার তালিকায় নেই নাম; ক্ষোভ অভিভাবকমহলে

নিজস্ব সংবাদদাতা, যশপাল সিং, ত্রিপুরা

একসময় খোয়াই মহকুমার বনেদী স্কুলগুলির দাপট ছিল গোটা রাজ্যে। শিক্ষকতার পাশাপাশি শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে তাঁদের অবদান রাজ্যজুড়ে প্রশংসিত হত। কিন্তু আজ সেই গৌরব যেন ক্রমশ ফিকে হয়ে যাচ্ছে। এবছরের শিক্ষক দিবস ২০২৫’-এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের সম্মাননার তালিকা প্রকাশের পর খোয়াইয়ের শুভবুদ্ধি মহলে প্রশ্ন উঠেছে— জেলার সদর মহকুমা খোয়াই কি সবদিক দিয়েই পিছিয়ে পড়ছে?

চমকপ্রদ হলেও সত্যি, রাজ্যের আটটি জেলার বিভিন্ন স্কুল ও শিক্ষকরা সম্মাননার দাবিদার হলেও তালিকায় নেই খোয়াই সদর মহকুমার কোনও বনেদী স্কুলের নাম। বরং জেলার প্রান্তিক এলাকার মুঙ্গিয়াবাড়ী দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয় ইনফরমেশন টেকনোলজি বিভাগে জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু খোয়াই সরকারি দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয় কিংবা খোয়াই সরকারি দ্বাদশ শ্রেণি (বালিকা) বিদ্যালয়ের নাম এই তালিকায় অনুপস্থিত। উল্লেখযোগ্য, প্রথম স্কুলেরই দ্বিতলে জেলা শিক্ষা আধিকারিকের কার্যালয় এবং দ্বিতীয়টির পাশেই বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিস। এছাড়া রয়েছে খোয়াই সরকারী ইংরেজী মাধ্যম বিদ্যালয়ের নামও। স্কুলগুলো বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের আওতায় রয়েছে।

অভিযোগ, চাকুরিচ্যুত ১০,৩২৩ শিক্ষকের পর থেকে শিক্ষা দপ্তর শিক্ষক সংকট মেটাতে কার্যত ব্যর্থ। রাজধানী ছাড়া বাকি জেলায় এই সংকট ভয়াবহ আকার নিয়েছে। খোয়াইয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় এবং শিক্ষা দপ্তরের গাফিলতিতে ২০২১ সালের মার্চের পর থেকে শিক্ষক বণ্টন সমতা রক্ষা সম্ভব হয়নি। নিয়মিত ক্লাস না হওয়া, উপরন্তু শিক্ষকদের উপর অতিরিক্ত দপ্তরীয় কাজের চাপ—সব মিলিয়ে স্কুলগুলোর পাঠদান প্রায় ছন্নছাড়া অবস্থায় পৌঁছেছে।

জনগণের দাবি, খোয়াই নামেই আজ জেলা সদর, কিন্তু প্রশাসনিক দৃষ্টি ও শিক্ষা দপ্তরের ফোকাস কার্যত অন্যত্র। তথ্যপ্রযুক্তি, সংস্কৃতি কিংবা সহপাঠ্য কার্যকলাপের ক্ষেত্রে জেলা সদরের পরিবর্তে অন্য এলাকা থেকে নাম উঠে আসায় অবাক অভিভাবকমহল। তাঁদের প্রশ্ন— কেন খোয়াই সদর মহকুমার স্কুলগুলির প্রতি প্রশাসনের এমন উদাসীনতা? খোয়াইয়ের সাধারণ মানুষ ও অভিভাবকদের আশা, শিক্ষা দপ্তর দ্রুত জেলার বনেদী স্কুলগুলির দিকে সমান নজরদারি চালাবে এবং খোয়াইয়ের শিক্ষাব্যবস্থার হারানো মর্যাদা ফিরিয়ে আনবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *