চিকিৎসায় অবহেলা ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, যশপাল সিং, ত্রিপুরা:
ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলা হাসপাতাল আবারও গুরুতর বিতর্কে জড়িয়েছে। এবার এক অসুস্থ শিশুর চিকিৎসা প্রদানে অস্বীকৃতি এবং তার পিতার সাথে কর্তব্যরত চিকিৎসকের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার মানবিক দিকটি নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

খবর অনুযায়ী, কৈলাসহর মহকুমার ইসবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা বাবুল মিয়ার তিন বছরের কন্যা সন্তানটি গত তিন দিন ধরে উচ্চ জ্বরে ভুগছিল। প্রথমে তাকে কৈলাশহর রাজীব গান্ধী মেমোরিয়াল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ঔষধ প্রয়োগের পরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায়, নিরূপায় বাবুল মিয়া আজ তার অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে পৌঁছান।
তবে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এক অপ্রত্যাশিত ও অমানবিক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন বাবুল মিয়া। অভিযোগ, কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে পরীক্ষা করা তো দূরের কথা, বাবুল মিয়ার সাথে অত্যন্ত রূঢ় আচরণ করেন এবং চিকিৎসা দিতে স্পষ্ট ভাষায় অস্বীকার করেন। চিকিৎসকের এমন অসংবেদনশীল মনোভাবের প্রতিবাদে এবং নিজ সন্তানের সুচিকিৎসার দাবিতে বাবুল মিয়া তার অসুস্থ কন্যাকে কোলে নিয়ে হাসপাতালের প্রবেশপথেই ধরনায় বসেন। তার একমাত্র দাবি, অভিযুক্ত চিকিৎসককে জনসমক্ষে তার অমার্জনীয় দুর্ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।
যেখানে রাজ্য সরকার প্রতিটি নাগরিকের কাছে মানসম্মত স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার করছে, সেখানে কিছু স্বাস্থ্যকর্মীর এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ সরকারের সেই মহৎ উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এই ঘটনা শুধু ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের ভাবমূর্তিই নয়, সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থাও কমিয়ে দিচ্ছে। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য মানবিক আচরণ এবং রোগীর প্রতি সংবেদনশীলতার উপর জোর দেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। এই বিষয়ে দ্রুত তদন্ত এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে।