দুর্গাপুর ব্যারেজে রাস্তা পরিদর্শনে এসে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ সেচমন্ত্রীর

বেজায় চটলেন সেচমন্ত্রী! কেন্দ্রের বিরুদ্ধে দাগলেন তোপ, কিন্তু কেন?
বিধান চন্দ্র গাঙ্গুলী, দুর্গাপুর: শুক্রবার সকালে দুর্গাপুর ব্যারেজে সংস্কার হওয়া রাস্তা পরিদর্শনে এসে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ করলেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তিনি বলেন, “২০১৫ সাল থেকে শুরু করে আজ অব্দি দুর্গাপুর ব্যারেজের লকগেট মেরামতির জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। বারো বছর ধরে ড্যামগুলোর ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য রাজ্যের তরফ থেকে বহুবার পলি উত্তোলনের আবেদন করা হয় কেন্দ্রের কাছে। দুর্গাপুর ব্যারেজেও দীর্ঘদিন ধরে পলি উত্তোলন না হওয়ায়, জল ধারণ ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। তাই দুর্গাপুর ব্যারেজে পলি উত্তোলনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জলশক্তি মন্ত্রক ও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন। কিন্তু আশ্বাস মিললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।”
ব্যারাজের পাশাপাশি রাস্তা নিয়েও ক্ষুব্ধ মন্ত্রী
অন্যদিকে দুর্গাপুর ব্যারেজের রাস্তা সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ” ১ লা মে থেকে রাস্তার কাজ শুরু হয়েছিল। ১৫ ই জুনের মধ্যে তা শেষ করার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ হয়েছে। তবে বৃষ্টির জন্য কিছুটা সমস্যা হয়। দেড় মাস রাস্তার কাজ চলায় বন্ধ ছিল জল ছাড়া। এখন জলের লেবেল স্বাভাবিক করার জন্য মাইথন, পাঞ্চেত ও দামোদর ব্যারেজ থেকে অল্প অল্প করে জল ছাড়া হচ্ছে। নিম্নচাপের দরুন কয়েকদিন ধরে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও ঝাড়খণ্ডে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় জলস্তর বেড়েছে দামোদর ব্যারেজে। এহেন পরিস্থিতিতে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যের তরফে আবেদন করা হয়েছে যাতে জল ছাড়ার আগে তেনুঘাট রাজ্যকে জানায়। ইঞ্জিনিয়ার, সেচ দপ্তরের আধিকারিক, জেলাশাসক সকলেই এই বিষয়ে নজর রাখছেন। সেচ দপ্তরের সচিব মণীশ জৈন নিজেও তদারকী করছেন। মানুষেরা যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হয় সেজন্য রাজ্য প্রশাসন সর্বদা তৎপর।”
সেচমন্ত্রীর পাল্টা প্রতিক্রিয়া বিজেপি নেতার
যদিও সেচমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে,” ১ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা দিয়ে দামোদর ব্যারেজের নীচের বিকল্প রাস্তা বানানো হয়েছিল সেটা খানাখন্দে পরিপূর্ণ হয়ে বেহাল দশায় পড়ে রয়েছে, সেই টাকা জলে চলে গেল, তার হিসেব আগে সেচমন্ত্রী দিন। আর ব্যারেজ সংস্কারের জন্য টাকার প্রয়োজন হলে মুখ্যমন্ত্রী আগে সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের মাধ্যমে জলসম্পদ উন্নয়ন পর্ষদে চিঠি লিখে জানান, কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্যই সহায়তা করবে। আসলে কেন্দ্রীয় সরকার সবচেয়ে বেশি আর্থিক সহায়তা করে পশ্চিমবঙ্গে, কিন্তু সেই টাকা এ রাজ্যে এসেই চুরি হয়ে যায়, হিসেব পাওয়া যায়না। তাই আগে চুরি বন্ধ করতে হবে, হিসেব দিতে হবে, তবেই টাকা মিলবে”।
সেচমন্ত্রী ছাড়াও এদিনের রাস্তা পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন, বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী, বাঁকুড়ার জেলাশাসক সিয়াদ এন, বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায়, বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি, পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক পোন্নভালম এস, দুর্গাপুর মহকুমা শাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা।