অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখকে দল যখন সতর্ক করে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে একসাথে কাজ করার বার্তা দিয়েছে, ঠিক তখনই দাদাদের অনুগামীরা দাদাদের বাঘ সিংহ বানাতে ব্যস্ত।
টাইগার অনুব্রত মণ্ডল ? পাল্টা কাজল শেখ সিংহ ?

বাঘ-সিংহের লড়াইয়ে উত্তাল বীরভূম, কেষ্ট-কাজল অনুগামীদের এআই যুদ্ধ ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল
বীরভূমের রাজনৈতিক আকাশে ফের ঝড়। কাজল শেখ বনাম অনুব্রত মণ্ডল—দলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে যখন তৃণমূল কড়া বার্তা দিচ্ছে, ঠিক তখনই দুই নেতার অনুগামীদের হাতে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্কের উপাদান। আর তা নিয়ে সরগরম গোটা জেলার রাজনীতি।
এবার মাঠে নেমেছে এআই প্রযুক্তি। দুই দাপুটে নেতাকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর ভিডিও। একটিতে দেখা যাচ্ছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার এসে জড়িয়ে ধরছে অনুব্রত মণ্ডলকে, অন্যটিতে সিংহ এসে কাজল শেখকে আলিঙ্গন করছে। ভিডিওর ক্যাপশনে স্পষ্ট বার্তা—‘আমার দাদা বাঘ’ বনাম ‘আমার দাদা সিংহ’। মঙ্গলবার দুপুর থেকে এই ভিডিওগুলো ভাইরাল হতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজনৈতিক মহলে।
তৃণমূল নেতৃত্ব যখন দু’পক্ষকেই দলীয় ঐক্য বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছে, তখন এই ধরণের ভিডিও যে দলীয় বার্তার পরিপন্থী—তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তবুও দুই শিবিরের তরফেই পাল্টা যুক্তি—এটি দাদাদের প্রতি ভালোবাসা থেকে করা হয়েছে, এতে নেতাদের সম্মানই বাড়ছে।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ‘বাঘ বনাম সিংহ’ প্রতিযোগিতা আদৌ দলের পক্ষে ইতিবাচক হবে কি না? তৃণমূল কি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটিয়ে শক্ত ভিত গড়তে পারবে, না কি এই প্রতীকী দ্বন্দ্ব আরও বিভাজনের পথে নিয়ে যাবে দলকে?
এখনও পর্যন্ত কেষ্ট বা কাজল—কারোর তরফেই এই ভিডিও প্রসঙ্গে সরাসরি প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে তাঁদের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, নেতারা এমন কোনও ভিডিও বানাতে বলেননি, এটা কর্মীদের আবেগ থেকেই তৈরি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, এআই ভিডিওতে বাঘ-সিংহের আবির্ভাব নিছক রসিকতা নয়, বরং তা বীরভূমে নেতাদের জনপ্রিয়তা এবং ক্ষমতার প্রতীক হয়ে উঠছে। তবে এই প্রতীক রাজনীতির ভবিষ্যত কতটা স্থায়ী হবে, তা সময়ই বলবে।